1. rasel1391992@gmail.com : Rasel Ahmed : Rasel Ahmed
  2. wadminw@wordpress.com : wadminw : wadminw
October 9, 2025, 1:38 am

আওয়ামী লীগ থেকে শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক মোঃ ইব্রাহিম খলিল।

ডেস্ক রিপোর্ট
  • Update Time : Sunday, October 5, 2025
  • 26 Time View

সম্পর্ক বদলে যায় একটি পলকে ঠিক তেমনি বিগত সময় যারা আওয়ামী লীগের সাথে সম্পৃক্ত ছিল তাদের অনেকেই রূপ পাল্টেয়ে বিএনপিতে যোগ দিচ্ছেন। আওয়ামী লীগ ঘনিষ্ঠদের পদপ্রাপ্তি নিয়ে তৃণমূল বিএনপি ক্ষুব্ধ, স্থানীয় রাজনীতিতে অস্থিরতা
মিঠামইন শ্রমিকদল কমিটি ঘিরে ক্ষোভ: স্থানীয় বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের তীব্র প্রতিক্রিয়া।

সম্প্রতি প্রকাশিত মিঠামইন উপজেলা শ্রমিক দলের নবগঠিত কমিটি স্থানীয় বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের একাংশের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ ও সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। নতুন কমিটিতে আওয়ামী লীগের সাথে অতীতে যুক্ত থাকার অভিযোগে কয়েকজনকে গুরুত্বপূর্ণ পদে অন্তর্ভুক্ত করায়, দলীয় কর্মীরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন। বিষয়টি নিয়ে মিঠামইনের রাজনৈতিক অঙ্গনে তুমুল আলোচনা-সমালোচনা চলছে।
নতুন কমিটির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন মোঃ ইব্রাহিম খলিল। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ইব্রাহিম খলিল অতীতে আওয়ামী লীগপন্থী রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এই নিয়োগকে কেন্দ্র করে ছাত্রদল ও যুবদলের বেশ কয়েকজন সক্রিয় নেতা প্রকাশ্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
মিঠামইন উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মোকাররম হোসেন খোকা তার ফেসবুক পোস্টে লেখেন,

“সংগ্রামী অভিনন্দন! শেখ পরিবারের বিশ্বস্ত হাতিয়ার, দীর্ঘদিনের আওয়ামী রাজনীতির পরীক্ষিত নেতৃত্ব, নবগঠিত মিঠামইন উপজেলা শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক জনাব মোঃ ইব্রাহিম খলিল—জাতীয়তাবাদী দলের এই দুঃসময়ে দলকে শক্তিশালী করার জন্য আপনাদের মতো আওয়ামী টাকা ওয়ালা লোকদের খুব প্রয়োজন। তাহলে অতিশীঘ্রই দল অনেক বড় এবং শক্তিশালী হয়ে যাবে বলে আশা করছি।😭”
এই পোস্টটি দ্রুতই ভাইরাল হয় এবং স্থানীয় বিএনপি অঙ্গনে আলোচনার ঝড় তোলে।
রাফি হক রানা,কাটখাল ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক, তার দীর্ঘ ফেসবুক পোস্টে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,

“বৈরাটির জিল্লু রহমান সাহেব একজন প্রতিষ্ঠাতা বিএনপি নেতা ছিলেন। কিন্তু তার ভাই ইব্রাহিম খলিল ৫ আগস্টের আগে কী করেছিল তা আমাদের জানা নেই। বরং দেখা গেছে আওয়ামী লীগের পক্ষে কাজ করতে। এখন সে উপজেলা শ্রমিকদলের সাধারণ সম্পাদকহয়ে গেছে—এটা কি ভাই ভাই রাজনীতি নয়? নাকি টাকার খেলায় এই পদ পাওয়া?”
রানা আরও উল্লেখ করেন যে, অনেক নিবেদিতপ্রাণ কর্মী যারা দীর্ঘদিন দলের জন্য সংগ্রাম করেছেন, তারা বাদ পড়ে গেছেন। সাবেক সাধারণ সম্পাদক নাঈম ভাইয়ের সঙ্গে তুলনা করে তিনি লেখেন, “বৈরাটির ইব্রাহিম নাঈমের ছিটেফোঁটার যোগ্যতাও রাখে না।”
একইভাবে কমিটির সহ-সভাপতি হিসেবে মনোনীত মোঃ গিয়াস উদ্দিনের বিরুদ্ধেও আওয়ামী লীগের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের অভিযোগ তুলেছেন অনেক নেতা-কর্মী। রানা তার পোস্টে লিখেছেন,
“৫ আগস্টের আগে গিয়াস উদ্দিন আওয়ামী লীগের দালালী করতেন। উপজেলা নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগপন্থী নেতাদের উঠান বৈঠকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতেন। আজ তিনি শ্রমিকদলের সহ-সভাপতি। তাহলে কি এখানে দলের দুঃসময়ের কর্মীদের উপেক্ষা করে আর্থিক বা ব্যক্তিগত সম্পর্ককে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে?”
যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোঃ মহিউদ্দিন রিপন নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন রানা ও অন্যান্য নেতারা। তাদের অভিযোগ, রিপন সাহেব আগে কখনো বিএনপির কার্যক্রমে সক্রিয় ছিলেন না, বরং আওয়ামী লীগপন্থী ব্যক্তিদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ ছিলেন।
“আমরা কি সত্যি তারেক রহমানের আদর্শে রাজনীতি করছি, না কি শুধু নিজেদের পুঁজি বাড়াচ্ছি?” —এমন প্রশ্ন রেখেছেন রাফি হক রানা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এই ক্ষোভ কেবল যুবদল ও ছাত্রদলের নেতাদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। তৃণমূল কর্মীদের মধ্যেও ব্যাপক অসন্তোষ বিরাজ করছে। অনেকের মতে, নবগঠিত শ্রমিকদলের কমিটি স্থানীয় বিএনপির অভ্যন্তরীণ বিভাজনকে আরও তীব্র করে তুলতে পারে।
এ প্রসঙ্গে মিঠামইন উপজেলা বিএনপির সভাপতি এ এইচ এম জাহিদুল ইসলাম জাহাঙ্গীরের নেতৃত্ব নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। কর্মীরা অভিযোগ করছেন, তার নেতৃত্বেই পকেট কমিটি তৈরি হয়েছে। কেউ কেউ মনে করছেন, এ সিদ্ধান্ত স্থানীয় পর্যায়ের বাইরে থেকে চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় রাজনীতিবিদদের একাংশ মনে করছেন, বিএনপির জন্য এটি একটি সংকটময় সময়। দলে সক্রিয় এবং দীর্ঘদিন সংগ্রাম করে আসা নেতাকর্মীদের বাদ দিয়ে যদি বাইরের লোক বা প্রভাবশালী অর্থশালী ব্যক্তিদের অগ্রাধিকার দেওয়া হয়, তবে মাঠ পর্যায়ের কর্মীরা হতাশ হয়ে পড়বেন এবং দল ভেঙে পড়ার ঝুঁকি থাকবে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, মিঠামইন উপজেলা শ্রমিকদলের এই দ্বন্দ্ব ভবিষ্যতে স্থানীয় নির্বাচনে বিএনপির সম্ভাবনাকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। আওয়ামী লীগপন্থী বলে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের কমিটিতে জায়গা দেওয়া হলে বিরোধী শিবিরের সমালোচনা আরও জোরালো হতে পারে।
অন্যদিকে, নতুন কমিটির পক্ষ থেকে কেউ আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিক্রিয়া না জানালেও ইব্রাহিম খলিলের ঘনিষ্ঠ সূত্র দাবি করেছে, তিনি অতীতে স্থানীয় রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন এবং দলের শক্তি বৃদ্ধি ও ঐক্য রক্ষার জন্যই তার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তাদের মতে, পূর্বের রাজনৈতিক মতাদর্শ পরিবর্তন করা কারো জন্য অস্বাভাবিক নয় এবং দলের স্বার্থেই তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

একইসঙ্গে স্থানীয় রাজনৈতিক অঙ্গনে প্রশ্ন উঠেছে, যদি সত্যিই আর্থিক লেনদেন বা ব্যক্তিগত সম্পর্কের কারণে এই কমিটি গঠিত হয়ে থাকে, তবে এটি দলীয় গণতন্ত্র ও নীতি-আদর্শের জন্য একটি বড় হুমকি।
মিঠামইনের অনেক তরুণ নেতাকর্মী জানিয়েছেন, তারা চান দলীয় নেতৃত্বে স্বচ্ছতা, যোগ্যতার মূল্যায়ন এবং ত্যাগী কর্মীদের অগ্রাধিকার। অন্যথায় বিএনপির তৃণমূল সংগঠন দুর্বল হয়ে পড়বে এবং ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক লড়াইয়ে দল পিছিয়ে যাবে।
স্থানীয় পর্যায়ে এই বিতর্ক এখন ফেসবুক পোস্ট, গ্রুপ চ্যাট ও আড্ডায় আলোচনার মূল বিষয় হয়ে উঠেছে। রাজনৈতিক মহল বলছে, এই অস্থিরতা দ্রুত না সামলাতে পারলে বিএনপির জন্য বড় ধরনের রাজনৈতিক ক্ষতি হতে পারে।
কমিটি বিতর্ককিশোরগঞ্জ রাজনীতিছাত্রদলবিএনপিমিঠামইনযুবদলশ্রমিকদলস্থানীয় রাজনীতি

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published.

More News Of This Category