দেশ-বিদেশে নৃত্যজগতের অনেক পরিচিত মুখ মোহাম্মদ দ্বীপ। কখনো ফোক এবং কখনো দেশাত্ববোধক গানের সঙ্গে নেচে বহু মঞ্চ মাতিয়েছেন তিনি। বর্তমানে মার্জিত এ নৃত্যশিল্পীর নুপুরের ঝংকারে আন্দোলিত হচ্ছে বিলেত ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশ। একযুগ ধরে বিলেতের ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশের নানান জায়গায় অনুষ্ঠান করে বিদেশের মাটিতে প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশের সংস্কৃতিকে জনপ্রিয় করে তুলছেন মোহাম্মদ দ্বীপ।
সাংস্কৃতিকতে অবদান রাখায় এবার দ্বীপকে দুটি পুরস্কারে ভূষিত করে দুবাই ওয়েসিস সংগঠন। দুবাইয়ের (গ্লোবাল) নৃত্য প্রতিযোগিতা থেকে নৃত্যর জন্য দুটি পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। সেখানে বিভিন্ন ধরনের নাচ, সঙ্গীত, যন্ত্র এবং আরও অনেক কিছুতে প্রায় তিনশতাধিক জন অংশগ্রহণ করেছিল। লোকনৃত্য এবং আধা শাস্ত্রীয় নৃত্যে অংশগ্রহণ করেছিলো তিনি। অবশেষে দুবাই মিউজিক ফেস্টিভ্যাল থেকে দ্বিতীয় দুটি পুরস্কার পেয়েছে দীপ। এটি ভারতে হিন্দুস্তান আর্টস অ্যান্ড মিউজিক সোসাইটি দ্বারা সংগঠিত।
মোহাম্মদ দ্বীপ একক পুরুষ নৃত্যশিল্পী হিসাবে ২০১৮ সালে লন্ডনে ‘নদী মিউজিক এন্ড ড্যান্স মিডিয়া’ তাঁর মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে প্রথমবারের মতো ‘আন্তর্জাতিক নৃত্য দিবস’ পালন করে সমগ্র ইউরোপের বাঙালিদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছিলেন। নৃত্যও যে একটি আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিপ্রাপ্ত বিনোদন তা তিনিই প্রথম ইউরোপের সমগ্র দেশসহ সমগ্র লন্ডনে বিনোদনপ্রেমী মানুষের মাঝে তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছেন। বিশেষ করে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে যত গান আছে তার উপরও নৃত্য করে সর্বমহলে সুনাম-খ্যাতি অর্জন করেছেন বাংলাদেশের প্রথিতযশা এ শিল্পী।
এ পর্যন্ত তিনি মেরিল-প্রথম আলো, বিটিভিসহ দেশে-বিদেশে বহু প্রোগ্রাম করেছেন এবং নৃত্যের উপর বিটিভি, এনটিভি, এটিএন বাংলাসহ দেশি-বিদেশী অংসখ্য টিভি চ্যানেলে কাজ করেছেন। প্রায় ২৮ বছর ধরে বিরামহীন কাজের মাধ্যমে তিনি দক্ষ নৃত্যশিল্পী হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলেছেন। নন্দিত এই শিল্পী কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অসংখ্য অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন।
মোহাম্মদ দ্বীপ খেলাঘর আসর (প্রজাপতি খেলাঘর, মগবাজার, ঢাকা) এর মাধ্যমে নৃত্যজগতে তার প্রথম হাতেখড়ি। তারপর তিনি বুলবুল ললিতকলা একাডেমিসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নৃত্যের উপর একাাধিক কোর্স করেছেন। এমএমডব্লিউএফ নামক একটি চ্যারিটি সংগঠনের কালচারাল টিমের টিম লিডার হিসাবেও কাজ করেছেন। বিটিভিসহ অনেক বাংলা চ্যানেলে নৃত্য পরিবেশনসহ নৃত্য পরিচালনা করেছেন। তিনি বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি ও নৃত্যশিল্পী সংস্থার একজন সদস্য।
ঢাকা দোহারের জয়পাড়া/সুতারপাড়ায় বেড়ে ওঠা এই শিল্পীর বাবা মরহুম মহিউদ্দিন মোল্লা বঙ্গবন্ধুর ড্রাইভার ছিলেন। ২০১১ সালের জানুয়ারিতে তিনি লন্ডনে যান এবং ইস্ট লন্ডনের ইস্টহ্যাম এরিয়ায় বর্তমানে বসবাস করছেন। লন্ডনে তিনি নৃত্যের পাশাপাশি পার্টটাইম একটি আইন প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন।
ডাবল মাস্টার্স করা এবং সৃষ্টিশীল মানসিকতার এই নন্দিত নৃত্যশিল্পী জানান, তাঁর স্বপ্ন লন্ডনে কুইনের সামনে পারফর্ম করা এবং বাংলাদেশ, ইউরোপসহ সারাবিশ্বে নাচ নিয়ে কাজ করা।
Leave a Reply