সাফ আয়োজিত “প্যারিসে ৬ষ্ঠ বারের মতো বাণিজ্য মেলা
সাফ আয়োজিত “প্যারিসে ৬ষ্ঠ বারের মতো বাণিজ্য মেলা:ঈদ বাজার ২০২৫।
পহেলা জুন, রিপাবলিক চত্বরে ঠিক এই জায়গায় solidarities Asie France -SAF কর্তৃক আয়োজিত মেলা অনুষ্ঠিত হলো,
যেখানে ছিল ৬৫ টারও বেশি স্টল, বাংলাদেশি, পাকিস্তানি মরে স্বাস্থ্য এবং দেশের মানুষের স্টল।
মেলা বাঙালির জীবনে খুবই পরিচিত একটি সামাজিক উৎসব যার সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত আমাদের স্মৃতিময় শৈশব।মেলা মানেই হচ্ছে মিলন ক্ষেত্র।সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের এক অন্যতম প্রধান উপকরণ হলো মেলা। প্রবাসের বিনোদনহীন ব্যস্ত তথা নিরানন্দপূর্ণ একঘেয়ে জীবনে আনন্দের জোয়ার নিয়ে আসে মেলা।
ব্যস্ততায় পরিপূর্ণ একঘেয়ে প্রবাস জীবনে ক্ষণিকের জন্য এক অচেনা জগতে আনন্দের জোয়ারে ভাসিয়ে দিতে সলিডারিটি আজি ফ্রান্স প্রতিবছরের ন্যায় ঈদের আগ মুহূর্তে বাণিজ্য মেলা:’ঈদ বাজার ‘আয়োজন করে থাকে। তারই ধারাবাহিকতা অক্ষুন্ন রেখে ৬ষ্ঠ বারের মত ‘বাণিজ্য মেলা’:’ঈদ বাজার’ অনুষ্ঠিত হলো প্যারিস শহরের প্রাণকেন্দ্র রিপাবলিক চত্বরে।
মেলার প্রারম্ভিকেই সাফ প্রেসিডেন্ট,নয়ন এন কে কতৃক স্বাগত বক্তব্য এর মধ্য দিয়ে মেলার উদ্বোধন কার্যক্রম শুরু করা হয়। প্রতিবারের মতো এই মেলাতে উপস্থিত হয়েছিল ফরাসি এমপি এবং প্রথমবারের মতো এবারের মেলায় উপস্থিত ছিলেন ফ্রান্সের সম্মানিত এমপি Aurelien Taché, আরো ছিল প্যারিসে ১৮ কাউন্সিলর Anzoumane Sissoko, অনেক কমিউনিটি ব্যক্তিত্ব, অনেক সাংবাদিক এবং আরো অনেকেই যা কিনা ছিল মেলার সবচেয়ে আকর্ষণীয় এবং গুরুত্বপূর্ণ দিক।
সকাল দশটা নাগাদ মেলার সকল অংশগ্রহণকারীর আগমন শুরু হয়। তাদের মুখরিত পদচারণায় রিপাবলিক চত্বর অল্পক্ষণের মধ্যেই কানায় কানায় পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে এবং মুহূর্তেই এক আনন্দঘন জাঁকযমক পরিবেশে রুপ লাভ করে।
মেলায় অংশগ্রহণকারীদের জন্য ছিল রকমারি ও আকর্ষণীয় সব অনুষ্ঠানের সমাহার। বড়দের জন্য ছিল কুইজ প্রতিযোগিতা, বিভিন্ন ধরনের খেলা সহ ছিল বাচ্চাদের জন্য হরেক রকমের বিশেষ বিশেষ আয়োজন। মেলায় অংশগ্রহণকারী সকল প্রবাসীদের স্বতঃস্ফূর্ত পদচারণায় সকাল থেকে পুরোটা সন্ধ্যা জুড়ে এক আনন্দঘন ও উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছিল যা কিনা হুট করে সাময়িকের জন্য দেশের মাটিতে ঈদের আগমুহূর্তের অনুভূতি দিচ্ছিল। সকলেই যেন শৈশব ও স্বদেশের এক অনন্য জগতে হারিয়ে গিয়েছিল।
মেলায় আগত দর্শনার্থীরা প্রত্যেকেই নিজ নিজ ব্যক্তিগত অভিমত ব্যক্ত করছিল।
তার মধ্যে একজন দর্শনার্থী ছিলেন সেলিম ভূঁইয়া, প্রিয় জন্মভূমি এবং পরিবার পরিজন ছেড়ে ফ্রান্সে আছেন আজ প্রায় দীর্ঘ আট বছর।তিনি জানান প্রথমবারের মতো তিনি এই মেলায় অংশগ্রহণ করেন। সুদূর প্রবাসে আপনজন ছেড়ে প্রায় সময়ই হতাশা এবং বিষন্নতায় ভোগেন। একত্রে এত বাঙালির অংশগ্রহণের এই মেলায় উপস্থিত থাকতে পেরে সাময়িকের জন্য আবেগ আপ্লুত হয়ে উঠেন। দূর প্রবাসে স্বদেশীদের মিলন মেলায় অংশগ্রহণ করতে পেরে নিজের আনন্দময় অনুভূতি ব্যক্ত করেন এবং সেই সাথে প্রতিবার অংশগ্রহণের দৃঢ় আশা প্রকাশ করেন।
মেলায় অংশগ্রহণকারী আরেকজন দর্শনার্থী আয়মা নূর, তিনি একজন শিক্ষার্থী এবং পাশাপাশি পার্ট টাইম চাকরিরত। পড়াশোনা এবং জব দুটো মিলিয়ে এতটাই ব্যস্ততায় সময় কাটে যে মন খুলে নিশ্বাসও নিতে পারেনা। এ ধরনের ব্যতিক্রমধর্মী মেলায় উপস্থিত হতে পেরে যেন প্রাণ ভরে নিঃশ্বাস নিতে পারছি জানালেন তিনি।
মেলার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক ছিল বিদেশীদের মাঝে আমাদের দেশীয় ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতির নিদর্শন তুলে ধরা।তারা আমাদের সংস্কৃতি এবং দেশীয় পোশাক এর বৈচিত্র্যতায় অভিভূত ছিলেন এবং প্রশংসায় পঞ্চমুখ ছিলেন।
মেলায় প্রায় পঞ্চাশের অধিক স্টল ছিল। স্টল গুলো সাজানো হয়েছিল মূলত দেশীয় বিভিন্ন ধরনের পোশাকের বৈচিত্র্যময় সমাহার নিয়ে, ছিল ঘরোয়া ভাবে হাতে তৈরি খাবার যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল আচার, পিঠা,ও ভর্তা।প্রতিবারের মেলায় উদ্দেশ্য থাকে বিগত বারের মেলার তুলনায় আরো বেশি নতুনত্ব ও ভিন্নমাত্রা যোগ করা। দর্শনার্থীদের চাহিদা অনুযায়ী সেই লক্ষ্যমাত্রা আমরা অর্জন করতে যথাযথভাবে সক্ষম হয়েছি বলে আশা করি। এবং পরিশেষে সন্ধ্যা আটটা নাগাদ সমাপনী অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে মেলার কার্যক্রম শেষ হয়।
Leave a Reply