খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের ” পবিত্র বড়দিন”কে কেন্দ্র করে ইউরোপিয়ান বাংলাদেশ খ্রিস্টান এসোসিয়েশনের নেতৃত্বে ফ্রান্সের তুলুজ শহরে অনুষ্ঠিত হল প্রাক্-বড়দিন উৎসব ও পিঠা মেলা।
রবিবার ছুটির দিন থাকায় জাতি, ধর্ম ও বর্ণ নির্বিশেষে বড়দিনের আনন্দ উৎসবে যোগ দিতে রং বেরঙের দেশীয় পোশাকে দুপুর নাগাদ সকলেই অনুষ্ঠানে হাজির হতে থাকে। প্রভু যীশুর আগমনকে স্বাগত জানাতে, নানা বিনোদনের মাধ্যমে দিনটি সাজিয়েছিল। বড়দিনের কেক কাটা, (বড়দিনের বিশেষ সংগীত)- কীর্তন পরিবেশন, পিঠা মেলা,দুপুরের আহার,সংগঠনের স্মরণিকা “শিকড়” উদ্বোধন, আলোচনা এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ছিল উল্লেখজনক।
দূর প্রবাসে প্রচন্ড কর্মব্যস্ততার মাঝে, এই মিলন মেলা যেন এক চিলতে আনন্দের খোরাক এবং নতুন প্রজন্মের জন্য অনন্য উদ্যোগ। এই সব অনুষ্ঠানের মাধ্যমেই তার বাংলা সংস্কৃতিকর সাথে পরিচিত হয়। নিজেদের মাঝে পারস্পারিক সম্পর্ক আরও দৃঢ় করে।
পিঠা মেলার পরপরই সাধারণ সম্পাদক এবং সভাপতির নেতৃত্বে সংগঠনের অন্যান্যদের উপস্থিতিতে সংগঠনের স্মরণিকা “শিকড়”-এর মোড়ক উন্মোচন করা হয়। অতিথিবর্গের উপস্থিতিতে বড়দিনের বিশেষ কেক কাটা হয়।,
ইউরোপিয়ান বাংলাদেশ খ্রিস্টান এসোসিয়েশনের সম্মানিত সভাপতি যোসেফ ডি কস্তার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশি কমিউনিটি এসোসিয়েশন তুলুজ ফ্রান্সের সম্মানিত সভাপতি ফখরুল আকম সেলিম, সাংগঠনিক সম্পাদক সাকের চৌধুরী সহ কমিউনিটির অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। আলোচনা অনুষ্ঠানের পূর্বে সাংস্কৃতিক সম্পাদক গ্লোরিয়া ইভা রোজারিও এর নেতৃত্বে মনমুগ্ধকর নৃত্য পরিবেশিত হয়। সংগঠনের সম্মানিত কার্য নির্বাহী সদস্য রিকি পি রোজারিও এর আকর্ষণীয় উপস্থাপনায় আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন মার্ক রায় -সাধারণ সম্পাদক, ইউরোপিয়ান বাংলাদেশ খ্রিস্টান এসোসিয়েশন, পঙ্কজ গমেজ – প্রচার সম্পাদক, লিওনার্ড এল রোজারিও- সহ কোষাধ্যক্ষ, ইভা গ্লোরিয়া রোজারিও – সহ- সংস্কৃতি সম্পাদক সহ অন্যান্যরা।
জাতি ধর্ম নির্বিশেষে সকলের উপস্থিতি এ অনুষ্ঠানকে আরো আকর্ষণীয় করে তোলে। সম্প্রীতির এক অনন্য উদাহরণ তুলুজ শহর। এখানে সবার পরিচয় আমরা প্রবাসী বাংলাদেশী। বক্তরা এ ধরনের অনুষ্ঠানের ভুয়াসি প্রশংসা করেন। নিজেদের পারস্পরিক সম্পর্ককে আরো দৃঢ় করতে এ ধরনের অনুষ্ঠান বেশি বেশি হওয়া উচিত বলে দাবি করেন।
সংগঠনের সেক্রেটারি তার বক্তব্যে সংগঠনের স্মরণিকা শিকড় এর প্রসঙ্গে উল্লেখ করেন যে,এই স্মরণিকা আমাদের সংগঠনের জন্য একটি দলিল। স্মরণিকা-কে সম্পূর্ণ করতে প্রবাস ও দেশর বিভিন্ন জায়গা থেকে যারা লেখা,বিজ্ঞাপন এবং মূল্যবান মতবাদ প্রদান করেছেন, তাদেরকে আন্তরিক অভিনন্দন। প্রবাসে এবং দেশের বিভিন্ন অংশ থেকে সংগঠনের স্মরণিকা “শিকড়”-এর পিছনের কার্যক্রম গুলো পরিচালনা করেছেন তাদের প্রতি সাংগঠনিক ভাবে আমারা কৃতজ্ঞ। তিনি আরো উল্লেখ করেন প্রবাসের সম্প্রীতির এক অসাধারণ উদাহরণ এই অনুষ্ঠান। জাতি ধর্ম ও বর্ণ নির্বিশেষে সকলে মিলে বছর শেষে বড়দিন পূর্ববর্তী এই বিশেষ অনুষ্ঠানটিতে যোগদানের জন্য সকলকে প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।
সর্বশেষে সভাপতি জোসেফ ডি কস্তা ,উপস্থিত সকলকে অনুষ্ঠানে আসার জন্য আন্তরিক অভিনন্দন ও বড়দিনের শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করে। তিনি উল্লেখ করেন আজকের এই মুহূর্তে, অনুষ্ঠানের পিছনে যারা বিভিন্ন অংশে কাজ করেছেন তাদের সকলকে সংগঠনের পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা। সংগঠনের স্মরণিকা “শিকড়” এর পিছনের বিভিন্ন অংশে যারা সাহায্য সহযোগিতা করেছেন তাদের সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন জানান। সামাজিক ও ধর্মীয় এসব বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তিনি সকলের সহযোগিতা কামনা করেন। পরিশেষে সকলকে আরেকটি বার ধন্যবাদ দিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।
Leave a Reply